নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলায় সরকার কর্তৃক নিয়োগ করা ডিলাররা ১০ টাকা কেজির চালের কার্ড নবায়নের জন্য হতদরিদ্রদের কাছ থেকে টাকা আদায় করছেন। অথচ এটি বিনা মূল্যে পাওয়ার কথা। বিষয়টি নিয়ে প্রথম আলো কথা বলেছে সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) নাটোরের সভাপতি রনেন রায়ের সঙ্গে।
প্রথম আলো: নলডাঙ্গা উপজেলায় সরকারের নিয়োগ করা ডিলাররা ১০ টাকা কেজির চালের কার্ড নবায়নের জন্য হতদরিদ্রদের কাছ থেকে ১২০ থেকে ১৫০ টাকা করে আদায় করেছেন। কার্ড নবায়ন বাবদ এভাবে টাকা নেওয়ার নিয়ম আছে? রনেন রায়: আর্থিক সংগতি না থাকায় সরকার হতদরিদ্রদের নামমাত্র মূল্যে চাল সরবরাহ করছে। এই চাল বিতরণের জন্য সরকার কার্ড সরবরাহ করছে। এটা নবায়ন করার দায়িত্বও সরকারের। এর জন্য নবায়ন ফি আদায় করার নিয়ম নেই। যদি ফি বাবদ টাকা নেওয়া হয়ে থাকে, তাহলে তা ‘ঘুষ’ হিসেবে গণ্য হবে। ঘুষের টাকা নেওয়ার পরিমাণ যত কমই হোক, তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের এ ব্যাপারে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
নবায়ন ফি বাবদ টাকা না দিলে সুবিধাভোগীদের চাল সরবরাহ না করার হুমকি দেওয়া হয়েছে। কার্ড বাতিল করার কথা বলা হয়েছে। ডিলাররা ভোক্তাদের এভাবে হুমকি দিতে পারেন? রনেন রায়: জনপ্রতিনিধিদের সুপারিশে উপজেলা প্রশাসন সুবিধাভোগীদের তালিকা করেছে এবং কার্ড সরবরাহ করেছে। ডিলাররা শুধু কার্ড দেখে চাল বিতরণ করবেন। কার্ড নবায়ন করায় ডিলারদের কোনো ভূমিকা নেই। তাঁরা কার্ড নবায়নের জন্য টাকা চাইতে পারেন না। কেউ না দিলে তাঁর কার্ড বাতিল করার হুমকি দেওয়ার এখতিয়ার তো তাঁদের নেই।
খাদ্য বিতরণের ডিলারদের তদারকি করার জন্য উপজেলা প্রশাসনের দায়িত্ব রয়েছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের নজর এড়িয়ে কি ডিলাররা ভোক্তাদের কাছ থেকে কার্ড নবায়ন ফি আদায় করেছেন? যদি তা না হয়, তাহলে খাদ্য বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কী করণীয় ছিল? রনেন রায়: ১০ টাকা কেজি দরে চাল সরবরাহের বিষয়টি নিয়মিত পর্যবেক্ষণের দায়িত্ব উপজেলা প্রশাসনের পাশাপাশি উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের। প্রায় সাত হাজার সুবিধাভোগীর কার্ড নবায়নে টাকা নেওয়ার ঘটনা তাদের নজর এড়াতে পারে না। দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেননি, আর তা না হলে তাঁরা অবৈধভাবে অর্জিত টাকার ভাগাভাগিতে অংশ নিয়েছেন। এখন তাঁদের উচিত আদায় করা টাকা প্রত্যেকের হাতে পৌঁছে দেওয়া এবং এই কর্মকাণ্ডের জন্য ক্ষমা চাওয়া।